বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ১২:০৯ পূর্বাহ্ন

পাঁচজনের পরীক্ষায় একজন শনাক্ত

পাঁচজনের পরীক্ষায় একজন শনাক্ত

স্বদেশ ডেস্ক:

বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। প্রতি পাঁচজনকে পরীক্ষা করেই পাওয়া যাচ্ছে একজন কোভিড রোগী। করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি মৌলভীবাজার জেলায়। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত আরও ৫ হাজার ৩৫৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে, যা একদিনে শনাক্তের সর্বোচ্চ রেকর্ড। একই সময়ে মারা গেছে আরও ৫২ জন, যা গত নয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশে করোনা ভাইরাসের ঊর্ধ্বগতি যেন থামছেই না। প্রতিদিনই নতুন রোগী শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় বাড়ছে। এটি আমাদের জন্য উদ্বেগের কারণ। দেশে করোনা সংক্রমণ আগের মতো ভয়াবহ অবস্থায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। দেশে করোনার ইউকে ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমিত রোগী থাকায় ও স্বাস্থ্যবিধি না মানায় এই সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর আগে দেশে করোনা সংক্রমণের পিকটাইমে অর্থাৎ জুন-জুলাই মাসে সংক্রমণ ছিল যথাক্রমে ২১ দশমিক ৪৯ শতাংশ এবং ২২ দশমিক ৪৬ শতাংশ। আর বর্তমানে সংক্রমণ হার ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৬ হাজার ৯৩১টি নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৩৫৮ জন। ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। দেশে এখন পর্যন্ত ৪৬ লাখ ৭০ হাজার ৫৭৬টি নমুনা পরীক্ষা করে রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬ লাখ ১১ হাজার ২৯৫ জন। মোট নমুনা পরীক্ষায় রোগী শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৯ শতাংশ। এর আগের দুদিন যথাক্রমে ৫ হাজার ৪২ জন এবং ৫ হাজার ১৮১ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশে একদিনে ৫ হাজার রোগী শনাক্ত হয়নি। দেশে গত তিন ধরে ৫ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে।

বর্তমানে দেশের ৩১টি জেলায় করোনার সংক্রমণ বেশি। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মৌলভীবাজার জেলা। এর পরই মুন্সীগঞ্জ, চট্টগ্রাম, ঢাকা, সিলেট, নরসিংদী, খুলনা, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, বরিশাল, রাজশাহী, বগুড়া, নড়াইল, গাজীপুর, ফরিদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, যশোর, মাদারীপুর, নওগাঁ, রংপুর, কিশোরগঞ্জ, নাটোর, টাঙ্গাইল ও কক্সবাজার।

নতুন করে মারা গেছে ৫২ জন। এদের মধ্যে ৩৮ পুরুষ ও ১৪ জন নারী। বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি বয়সী ৩০ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৮ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৮ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৫ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১ জন রয়েছে। অঞ্চল বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে ৩৪ জন, চট্টগ্রামে ৯ জন, রাজশাহী ৩ জন, খুলনায় ৩ জন, সিলেট ২ জন ও রংপুরে ১ জন রয়েছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ২ হাজার ২১৯ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে ১ হাজার ৫৪২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৭৬ জন, রংপুরে ১৪ জন, খুলনায় ১৩ জন, বরিশালে ১১ জন, রাজশাহীতে ৩২ জন, সিলেটে ২৭ জন ও ময়মনসিংহে ৪ জন রয়েছে।

প্রতিদিন কমছে টিকা গ্রহণকারী : বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত কমছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণকারীর সংখ্যা। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, টিকাদান কার্যক্রম শুরুর প্রথম দুই সপ্তাহে আড়াই লাখের বেশি মানুষ টিকা নিলেও এখন তা অর্ধ লাখে নেমে এসেছে। গতকাল মঙ্গলবার টিকা নিয়েছেন ৫০ হাজার ৭৫২ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৩ হাজার ৫২৮ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ হাজার ৬৫২ জন, চট্টগ্রামে ৯ হাজার ১৯৪ জন, রাজশাহীতে ৮ হাজার ২৩৬ জন, রংপুরে ৫ হাজার ৩৭৪ জন, খুলনায় ৮ হাজার ৫০ জন, বরিশালে ১ হাজার ২৯৯ জন এবং সিলেটে ১ হাজার ৪১৯ জন রয়েছে। দেশে এখন পর্যন্ত টিকা নিয়েছে ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ৪৩১ জন। এখন পর্যন্ত যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে ৯৩৩ জনের শরীরে মৃদু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এ ছাড়া গতকাল বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৬৮ লাখ ২ হাজার ৪৪২ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণের কারণে কোভিড শনাক্তকরণ পরীক্ষায় পজিটিভ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। চলমান কোভিড-১৯ টিকার দুটি ডোজ গ্রহণের ন্যূনতম দুই সপ্তাহ পর থেকে সর্বোচ্চ প্রতিরোধ সক্ষমতা তৈরি হয়। তাই এ সময়ে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থেকে যায়। টিকা গ্রহণের আগে এবং পরে মাস্ক ব্যবহারসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877